ইসলামের ইতিহাসে “আহলে কোরআন” বা কুরআনিস্ট নামে পরিচিত একটি ধারা গড়ে উঠেছে। এদের মূল লক্ষ্য হলো কোরআনকেই একমাত্র পথপ্রদর্শক হিসেবে গ্রহণ করা। তবে সময়ের সাথে সাথে তাদের চিন্তাধারায় পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা দুইটি প্রধান শাখায় বিভক্ত হয়েছে।
১. আহলে বাইত নীতির কোরানিস্ট
এই ধারা অপেক্ষাকৃত নরমপন্থী। এরা কোরআনের পাশাপাশি সামাজিক বাস্তবতা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সচেষ্ট।
মূল বৈশিষ্ট্যঃ
রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা:
কোন রাজনৈতিক দল বা মতাদর্শে নিজেকে আবদ্ধ করে না। স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে জীবনযাপন করতে চায়।
সালাত বিষয়ে অবস্থান:
প্রচলিত সালাতের ব্যাখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, দায়েমী সালাত (নিরন্তর সালাত) এর সাথে সাথে পাঁচ ওয়াক্ত আনুষ্ঠানিক সালাতও পালন করে।
হাদীসের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি:
হাদীসকে শরীয়তের দলিল হিসেবে মানে না। তবে কোরআনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে গ্রহণ করে।
২. আহলে মুয়াবিয়া নীতির কোরানিস্ট
এই ধারার অনুসারীরা অপেক্ষাকৃত কঠোরপন্থী এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও সক্রিয়।
মূল বৈশিষ্ট্যঃ
রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা:
এরা রাজনৈতিক দল বা আন্দোলনে যুক্ত থাকে। তাদের মতে রাষ্ট্রক্ষমতা ছাড়া ইসলাম টিকে থাকতে পারে না।
সালাত বিষয়ে অবস্থান:
প্রচলিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে।
হাদীসের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি:
হাদীসকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে। অনেকে এটিকে “শয়তানের বানী” হিসেবে মনে করে।
ইতিহাস ও বর্ণনা সম্পর্কে অবস্থান:
আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদের উপর কোরআন নাযিল হয়েছে— এ বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করে। ইতিহাসকে অবিশ্বাস করে, কেবল লিখিত কোরআনকেই সত্য হিসেবে গ্রহণ করে।